তবে উচ্চপর্যায়ের এই বৈঠকে কূটনীতিকেরা কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কিছু শঙ্কা প্রকাশ করেন। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে বাধ্য করার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে আসছে। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এই পাঁচ শীর্ষ কূটনীতিক হলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের প্রধান রেনসজে তিরিংক, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ও কানাডার হাইকমিশনার বেনোইত প্রিফন্টেইন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ কূটনীতিক মূলত মিয়ানমারের পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের বিষয়ে আলাপ করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার পর তারা কী অবস্থায় আছে। ভাসানচরে কী সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে তাঁরাও খোঁজখবর নিয়েছেন। ভাসানচরে তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হচ্ছে এবং এটা দ্বীপে যাওয়া-আসার ব্যবস্থা রয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁদের নিশ্চিত করেছে।
বৈঠকে এই কূটনীতিকেরা মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সহজ হবে না বলে জানান।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিদের ভাষ্য, তাঁরা সামাজিক ও আর্থিক চাপ তৈরির চেষ্টা করছেন। এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’ জাপানের প্রতিনিধি বলেন, ‘মিয়ানমার সরকারকে আমরা বলেছি বিষয়টি সমাধান করতে। তবে ১ ফেব্রুয়ারির ঘটনা তাদের ফিরিয়ে নেওয়াকে জটিল করে তুলেছে।’
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ভাসানচরে স্থানান্তরের বিষয়ে তাঁরা কিছুটা চিন্তিত বলে মনে হয়েছে। আমরা বলেছি, ভাসানচরে কাউকে জোর করে নিয়ে যাচ্ছি না। এই পাঁচ দেশ রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা করতে চায় বলেও জানিয়েছে। আমরা বলেছি, ভাসানচরে ১৫ ফুট উঁচু বেড়িবাঁধ দিয়েছি, সাইক্লোন শেল্টার, রাস্তাঘাট করে দিয়েছি। যে কেউ ইচ্ছা করলে যেতে পারবে। আমি তাঁদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি ভাসানচরে যাওয়ার। বলেছি আপনারা ঘুরে দেখে এলে আর শঙ্কা থাকবে না। এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে তাঁরা সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, আমরা যেন জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাই।’